Showing posts with label অধ্যাপক গোলাম আজম. Show all posts
Showing posts with label অধ্যাপক গোলাম আজম. Show all posts

Friday, December 27, 2019

গোলাম আজমের রুপরেখা বাস্তবায়ন হল বাংলাদেশ, নেপাল, পাকিস্তান, তিউনিশিয়ার পর তুরস্কেও - সাংবাদিক নুরুল কবির



(নুরুল কবীর একজন বাংলাদেশী সাংবাদিক, লেখক, কলাম লেখক, সম্পাদক এবং কর্মী। তিনি দ্য নিউ এজের সম্পাদক। নৈর্বাচনিক স্বৈরতন্ত্র ও গণতন্ত্রের সংগ্রাম এবং দ্য রেড মাওলানা তার দুটি আলোচিত বই।)

বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে নন্দিত এবং নিন্দিত একটি নাম গোলাম আজম । আমি ব্যক্তিগত ভাবে তাকে চিনি না । খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ আমার হয়নি । তবে তার লেখা অনেক বই পড়েছি ।  তার মেধার তুলনা তার বই । ছোটবেলা থেকেই আর নয় জন বাংলাদেশীর মত আমিও তাকে ঘৃণা করেই বড় হয়েছি হলুদ মিডিয়ার কল্যাণে । “আর নয়জন” বললাম একারনে দশজনের একজন তার বা তার আদর্শেরপক্ষে ছিল ।ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা “র” এর এক জরিপ ছিল এমন যে “শতকরা ২৫ জন জামায়াতের সমর্থক বাংলাদেশে” ২০০৯ এর পরে তাকে/ তাদের সম্পর্কে জানার সুযোগ হয় আমার । এখনও কম বেশী জানার চেষ্টা করছি । আমি সব সময় বিতর্কিত মানুষকে পছন্দ করতাম যারা দেশ ব্যাপি বিশ্বব্যাপি বিতর্কিত এমন সব লোক । আমার লজিক পৃথিবীর সব বহুল বিতর্কিত ব্যক্তিরাই ছিল জ্ঞানী , স্বরণীয়, বরণীয় ।সেটা হিটলার থেকে মুছোলিনী, চেঙ্গিস খান থেকে নেপোলিয়ান, শেখ মুজিব থেকে গোলাম আজম । আজকের বিষয় গোলাম আজম ।

মেধাবী চৌকস ও অভাবনীয় নেতৃত্বের গুণাবলীসম্পন্ন ক্ষণজন্মা মানুষটি ১৯২২ সালে ঢাকার লক্ষ্মীবাজারে নানার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এমএ পাস করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে সম্পৃক্ত হন ছাত্র আন্দোলনের সাথে। ১৯৪৭-৪৮ ও ৪৮-৪৯ সালে পরপর দু’বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)-এর জিএস (জেনারেল সেক্রেটারি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় অংশ নিয়ে পাকিস্তান সরকার ৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়অংশ নিয়ে পাকিস্তান সরকার কারা নির্যাতিত হন। এই মহান নেতা ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ছিলেন। শেখ মুজিব কর্তৃক ’৬৬ সালের ছয় দফা দাবি তৈরিতে অংশ নেয়া ২১ সদস্যের অন্যতম।

১৯৫০ থেকে ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত তিনি রংপুর কারমাইকেল কলেজে অধ্যাপনা করেন। ১৯৫৪ সালে যোগদান করেন জামায়াতে ইসলামীতে এবং প্রত্যক্ষভাবে শুরু করেন রাজনৈতিক জীবন। অখ- পাকিস্তানে ১৯৫৫ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। কপ (কম্বাইন্ড অপজিশন পার্টি) পিডিএম (পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট) এর সেক্রেটারী জেনারেলের দায়িত্ব পালন করেন।  ডাক (ডেমোক্রেটিক এ্যাকশন কমিটি) ইত্যাদি আন্দোলনে জনাব শেখ মুজিবুর রহমানসহ অন্য সকল দলের নেতাদের সাথে অংশগ্রহণ করে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। রাজনৈতিক কারণে ১৯৬৪ সালেও তাকে কারাবরণ করতে হয়েছিল ।

১৯৪৮ সালে পাকিস্তানের প্রথম প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান ঢাকায় আসেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেসিয়াম মাঠে ছাত্রদের উদ্দেশে ভাষণ দেন। তাকে ২৭ নবেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসমাজের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবি সংবলিত একটি ঐতিহাসিক স্মারকলিপি প্রদান করা হয় যার নেতৃ্ত্ব দেন গোলাম আজম ।

তার ছোট্ট একটা বর্ণনা দিলাম এ কারনে তার সত্য সম্পর্কে আমরা খুব কম জেনেছি । ৯১ বছর বয়সে ৯০ বছর সাজা পাওয়া এ মানুষটি সম্পর্কে জানা উচিৎ আমাদের নতুন প্রজন্মের । ৭১ এর মহান মুক্তিযু্দ্ধ নিয়ে তাকে সবচেয়ে বিতর্কিত হতে হয়েছে । যারা ৪৭ এর দেশ ভাগ দেখেছে । দেখেছে বিশাল ভারতের নোঙরামি । কিভাবে ছোট ছোট দেশ গুলোকে নপুংশুক এর মত গিলে খেতে (উদা: স্বাধীনদেশ "সিকিম") তাদের পক্ষে ৭১এ সিদ্ধান্ত নেয়া কঠিন ছিল । ১৯৪ বছর ইংরেজদের কাছে পরাধীন থাকার পর যে মুসলিমরা আলাদা দেশ পেল সে দেশ আবার হাত ছাড়া হয়ে যাবে ,ভাগ হয়ে যাবে । এটা মানতে পারছিল না তারা । যেমন মানতে পারছিল না সদ্য পাওয়া নতুন দেশ পাকিস্তানের সাশকদের অত্যাচার ও । ইন্দিরা গান্ধিরা যখন বার বার এ কথা বলে বেড়ােতা সভা সমাবেশে "মাথার এক পাশে ব্যাথা থাকলে বাঁচা জায় কিন্তু মাথার দুই পাশে ব্যাথা নিয়ে ঘুমানো মুশকিল" ভারতের দুই পাশে দুই মুসলিম দেশ পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তান কে উদ্ধেশ্য করে ছিল এমন বক্তব্য। 
 তার জানাজা নামাজের দিন গিয়েছিলাম, যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত একজন মানুষের এমন শোক মিছিল দেখে আমার মত অবাক হয়েছিল এ দেশের সকল গনমাধ্যম,বিশ্বমিডিয়া । বহুল বিতর্কিত ছিল তার অভিযোগ । ট্রেয়াল দেয়া শাক্ষি । ৪৩ নাম্বার আসামির যদি ৯০ বছর সাজা হয় তাহলে বাকি ৪২ জনের নামও কেন জাতি জানেনা । নতুন প্রজন্মের কাছে আজীবন এটা কৌতুহল থেকে জাবে আ,লীগ সহ তার বিরোধীর কাছে । ২০১২ তে গোলাম আজম যুদ্ধাপরাধীর আসামি হলে । ৯৪ তে কিভাবে আ,লীগের কাছ থেকে মন্ত্রীর প্রস্তাব পাঠায় । কি ভাবে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী আবদুস সাত্তারকে জায়নামাজ, তসবি দিয়ে কদমবুচি করতে পাঠায় খোদ দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা । আরো অসংখ প্রশ্ন হয়তো মাথায় আসবে নতুনদের । যার উত্তর হয়তো কেউই দিবে না ।

১৯৮০’র দশকে এবং ১৯৯০ সালে এরশাদবিরোধী আন্দোলনে এবং ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত কেয়ারটেকার সরকারের দাবিতে বিএনপি’র বিরুদ্ধে আন্দোলনে জামায়াত ও আওয়ামী লীগ যুগপৎ আন্দোলন করেছিল । একটি সুষ্ঠ পদ্ধতিতে নির্বাচনের জন্য যখন কোন ফর্মুলাই কাজে আসছিলনা । তখন গোলাম আজম কেয়ারটেকার পদ্ধতি আবিষ্কার করলেন । কিছুটা বিরোধীতা থাকলেও একটা পর্যায় সকলেই বলতে বাধ্য হন এর থেকে ভাল দ্বিতীয় কোন পথ নেই । দেশে বিদেশে উচ্ছসিত প্রসংশা পায় । যারা একটা সময় এক সাথে আন্দোলন করে কেয়ারটোকার পদ্ধতি চালু করলেন আবার সেই তারাই তাদের স্বার্থে সেটার বিলুপ্তি করে দেন । যার খেসারত আজো দিচ্ছে বাংলাদেশ । যে গণতন্ত্র উত্তরণে ৯০-এ তার কেযারটেকার পদ্ধতি জাতিকে দিয়েছিল মুক্তির দিশা । কিন্তু অবাক করার বিষয় হচ্ছেনির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পথিকৃত মনে করা হয় বাংলাদেশকে। এ ব্যবস্থা চালু করে বাংলাদেশ এক সময় বিশ্বে প্রশংসা কুড়িয়েছিল। আওয়ামী লীগ এ ব্যবস্থার জন্য কৃতিত্ব দাবি করলেও এই দলটিই আবার ব্যবস্থাটি বাতিল করে দিয়েছে, যার জের ধরে বাংলাদেশ রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে।
আওয়াম লীগ সরকার সংবিধান পরিবর্তন করে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করে দিলেও নেপাল, পাকিস্তান, তিউনিশিয়া সহ বহু দেশই এখন এ ব্যবস্থাকে গ্রহণ করেছে। সর্বশেষ এই তালিকায় যোগ হচ্ছে তুরস্কের নাম।

ড.মুহাম্মদ শহিদুল্লাহর একটি লেখা পড়ছিলাম “যে দেশে গুণিদের কদর করতে জানেনা, সে দেশে গুণি জন্মে না” ড. শহিদু্ল্লাহ নেই তার কথা আছে । গোলাম আজম নেই তার দেখানো পদ্ধতিতে আজো সমাধান খুঁজে পায় বিশ্বের বিভিন্ন্ প্রান্তে ।

Wednesday, May 15, 2019

ভাষা সৈনিক হিসাবে গোলাম আজমের স্বীকৃতি জরিপ

ভাষা সৈনিক হিসাবে গোলাম আজমের স্বীকৃতি জরিপ: 

গোলাম আজম শুধু ভাষা সৈনিক নন, অধিকন্তু ভাষা সেনাপতি। 

Wednesday, January 24, 2018

অধ্যাপক গোলাম আযম সাহেবের আল্লাহর দরবারে চোখের পানি ফেলে শহীদ হবার জন্য ফরিয়াদ

১৯৯৬ সালের কেন্দ্রীয় রুকন সম্মেলনে তৎকালীন আমীরের জামায়াত মরহুম অধ্যাপক গোলাম আযম সাহেব আল্লাহর দরবারে চোখের পানি ফেলে শহীদ হবার জন্য যে ফরিয়াদ করেছিলেন আল্লাহ রাব্বুল আলামীন হয়ত উনার সেই ফরিয়াদ সেদিন কবুল করে নিয়েছিলেন:
(একবার ক্লিক করে ভিডিও চালু না হলে ২য় বার ক্লিক করুন)

Thursday, July 20, 2017

প্রফেসার গোলাম আজম কি শহীদ? একটি পর্যালোচনা।


প্রফেসার গোলাম আজম কি শহীদ? একটি পর্যালোচনা।
-  শাহাদাতুর   রহমান   সোহেল
আমি ফেইসবুকে একটা ভিডিও পোষ্ট দিয়েছিলাম। সেখানে কমেন্টে প্রফেসার গোলাম আজমের শাহাদাত সংক্রান্ত একটা পর্যালোচনা হয়েছে ।   আলোচনাটি আকর্ষনীয় হওয়ায় এখানে পোষ্ট আকারে সাজিয়ে দিলাম:

Shahadatur Rahman Sohel:
শহীদ প্রফেসর গোলাম আযম সাহেবের শেষ ইন্টারভিউ. তার গ্রেফতার প্রসঙ্গেঃ 'জীবনে বহুবার গ্রেফতার হয়েছি আর মুমিনতো মৃত্যুকে পরোয়া করেনা, আর যদি অন্যায় ভাবে মৃত্যু দেয়া হয় তাহলে শহীদ হওয়ার গৌরব পাওয়া যায় সে হিসেবে ইসলামী আন্দোলনের কর্মি হিসেবে শাহাদাত কামনা করি। সেজন্য ভয় কিসের? আল্লাহকে ছাড়া কাউকে ভয় করা তো জায়েজই না, আল্লাহ কে ছাড়া কাউকে ভয় করার অনুমতি নাই'

S.m. Hasan:

শহীদ প্রফেসর গোলাম আযম ?? শহীদ ?? how, why?

#ShahadaturRahmanSohel answer me please

Shahadatur Rahman Sohel:
আমরা হাদীস থেকে জানি- যারা সত্যিকার শাহাদাত কামনা করবে তারা বিছানায় শুয়ে মৃত্যুবরণ করলেও শহীদ হবে। প্রফেসর গোলাম আযম সাহেবের সমস্ত জীবন সাক্ষী দেয় তার শাহাদাত কামনা সত্যিকারের ছিল। তাছাড়া জালিমের কারাগারের হয়রানী সহ্য করে মৃত্যুবরণ করেও তিনি শহীদ হিসাবে গণ্য হবেন না -এটা তো আমার কাছে আশ্চর্যজনক মনে হয়। আমি মনে করি- অবশ্যই তিনি শহীদ। কেউ ভিন্নমত পোষণ করতে পারেন। হে আল্লাহ! প্রফেসর গোলাম আযমকে উচ্চপর্যায়ের শাহাদাত দান কর এবং জান্নাতুল ফিরদৌস নসীব কর, আমীন।

Abu Sayeed:
"যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি ঈমান এনেছে তারাই তাদের রবের কাছে ‘সিদ্দীক’ ও ‘শহীদ’ বলে গণ্য৷ তাদের জন্য তাদের পুরস্কার ও ‘নূর’ রয়েছে" (সুরা হাদীদ: ১৯ নং আঃ)৷ হাদীসে হযরত বারা ইবনে আযেব বর্ণনা করেছে যে, তিনি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে একথা বলতে শুনেছেন যে, "আমার উম্মতের মু'মিনগণই শহীদ। " তারপর নবী (সা) সূরা হাদীদের এ আয়াতটি তেলাওয়াত করলেন (ইবনে জারীর)৷ ইবনে মারদুইয়া হযরত আবুদ দারদা থেকে এই একই অর্থের একটি হাদীস উদ্ধৃত করেছেন যে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ "যে ব্যক্তি তার প্রাণ ও দীন বিপন্ন হবে ও কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হবে এ আশংকায় কোন দেশ বা ভূ-খণ্ড ছেড়ে চলে যায় তাকে আল্লাহর কাছে 'সিদ্দীক'বলে লেখা হয়। আর সে যখন মারা যায় তখণ আল্লাহ শহীদ হিসেবে তার রূহ কবজ করেন। একথা বলার পর নবী (সা) এ আয়াতটি তেলাওয়াত করলেন৷
অধ্যাপক গোলাম আযমের চতুর্থ ছেলে সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহিল আমান আযমী তাঁর পিতাকে আল্লাহ যাতে শহীদ হিসাবে কবুল করেন এজন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন। একজন মুসলমান নামাজ পড়ে না্মাজ কবুলের জন্য দোয়া করে। তেমনি একজন শহীদ ব্যক্তিরই শাহাদাত কবুলের জন্য দোয়া করা হয়। মহান আল্লাহ অধ্যাপক গোলাম আযমকে সর্বোচ্চ পর্যায়ের শহীদ হিসাবে কবুল করুন, আমীন
একদিন লেখিকা মাসুদা সুলতানা রুমী আপার বাসায় গেলে তার লেখা একটি পান্ডুলিপি চোখে পড়ে। নাম দিয়েছেন ''মরনের আগে ও পরে প্রিয়জনদের করনীয় । "
পান্ডুলিপি পড়তে পড়তে এক যায়গায় আটকে গেলাম। সেখানে অধ্যাপক গোলাম আযম স্যারের সাথে লেখিকার কথোপকথনের কিছু অংশ তুলে দেওয়া হয়েছে। লেখাটি এত পছন্দ হয়ে যায় যে, কমরেড মাহমুদ বইটির প্রকাশক হয়ে যায়। এখানে উল্লেখ আছে লেখিকা গোলাম আযম সাহেবকে জিজ্ঞেস করেন-
"জামাই, সরকার যেভাবে কথাবার্তা বলছে তাতে আপনাকে ছাড়বে বলে মনে হয়না....!!! "
উত্তরে আযম সাহেব বলেন-
এদেশের জনগনের গড় আয়ু ৫০-৬০ বছর। সেখানে আল্লাহ্‌ আমাকে ৮৫ বছর বয়সেও বাঁচিয়ে রেখেছেন। ইসলামী আন্দোলন করতে এসে সব সময় মনে শাহাদতের কামনা লালন করেছি। এই বয়সে এসে মহান আল্লাহ্‌ তায়ালা যদি আমাকে ভালবেসে আমাকে রহম করে শাহাদতের মর্যাদা দেয় এতে তোমরা পেরেশান হচ্ছো কেন? তোমাদের দোয়া করা উচিত মহান আল্লাহ্‌ আমাকে যেন এই মর্যাদা থেকে বঞ্চিত না করেন...!!"
আল্লাহ্‌ রাব্বুল আলামীন তার প্রিয় বান্দাকে এভাবেই মর্যাদাশীল করবেন কে বুঝতে পেরেছিল...!! সারা বিশ্বব্যাপী আজ শোকে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে এই মহান নেতাকে হারিয়ে।। আল্লাহতালা নিজেই ঘোষনা করেছেন তিনি তার প্রিয় বান্দাদের মর্যাদা দান করেন। আল্লাহ উনাকে জান্নাতুল ফিরদাউসের মেহমান হিসাবে কবুল কিরে নিন। আমীন...
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, 'সর্বোত্তম জিহাদ হলো অত্যাচারী শাসকের সামনে সত্য কথা বলা।' (মুসনাদ আহমদ : ৩/১৯) তিনি আরও বলেন, সর্বোত্তম শহীদ হলেন হামযা(রাঃ), অতপর ওই ব্যক্তি যে জালেম শাসকের সামনে গিয়ে দাঁড়ায় আর সে তাকে সৎ কাজের আদেশ দেয় এবং অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করে। ফলে তাকে(ঐ ব্যাক্তিকে) সে(জালেম শাসক) হত্যা করে। (হাকেম, মুস্তাদরাক: ৩/১৯০; জাসসাস, আহকামুল কুরআন : ১/৭০)

Shahadatur Rahman Sohel: 
অধ্যাপক গোলাম আজম মারা যাওয়ার পর সারা বিশ্বব্যাপী নানা দেশে গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কাতারের দোহাতে অবস্থিত সাইয়্যেদা আয়েশা মসজিদে শুক্রবার জুমুয়া নামাজের পর অধ্যাপক গোলাম আজমের গায়েবানা জানাযা অনুষ্ঠিত হয়েছে । জানাজায় ইমামতি করেন বর্তমান বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ইসলামিক স্কলার হিসেবে পরিচিত আল্লামা ইউসুফ আল কারযাভী। সারা তুরস্ক জুড়ে ৮৮টি গায়েবানা জানাজা হয়েছে। পাকিস্তানের বিভিন্ন প্রদেশে গোলাম আযমের গায়েবানা জানাজা পড়েন সে দেশের ইসলামপ্রিয় জনগণ। করাচিতে গায়েবানা জানাজায় ইমামতি করেন পাকিস্তান জামায়াতের সাবেক আমির সৈয়দ মোনাওয়ার হোসেন। লাহোরে গোলাম আযমের গায়েবানা জানাজা পড়ান পাকিস্তান জামায়াতের আমির ডঃ মৌলানা সিরাজুল হক। তিনি অধ্যাপক গোলাম আজমকে শহীদ হিসাবে আখ্যায়িত করেন। জানাজার সময় সিরাজুল হক বলেন, অধ্যাপক গোলাম আযমের শাহাদাতে আমরা গর্ববোধ করি।    

(একবার ক্লিক করে ভিডিও চালু না হলে ২য় বার ক্লিক করুন)


এই লিংকটি ব্রাউজ করে প্রবন্ধটি পাঠ করুন প্লীজ: শাহাদাতের মর্যাদা 


Sunday, March 5, 2017

কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থা, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে এর প্রয়োগ এবং জামায়াতে ইসলামী


-  শাহাদাতুর   রহমান   সোহেল
                   
 কেয়ারটেকার (নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক) সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা এক সময় বাংলাদেশের গণতন্ত্র বিকাশের অন্যতম প্রধান উপাদান হিবাবে গৃহীত হয়েছিল। সারা পৃথিবীর মধ্যে সর্বপ্রথম বাংলাদেশেই এর প্রয়োগ হয়। এই ব্যবস্থার আবিষ্কারক অধ্যাপক গোলাম আজম। দ্য নিউ এজের সম্পাদক সাংবাদিক নুরুল কবির বলেন:  ‍‍‌‌‌‌‌‌“গোলাম আজমের রুপরেখা বাস্তবায়ন হল বাংলাদেশ, নেপাল, পাকিস্তান, তিউনিশিয়ার পর তুরস্কেও।”‍‍‌‌‌‌‌‌  তিনি বলেন:  ১৯৮০’র দশকে এবং ১৯৯০ সালে এরশাদবিরোধী আন্দোলনে এবং ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত কেয়ারটেকার সরকারের দাবিতে বিএনপি’র বিরুদ্ধে আন্দোলনে জামায়াত ও আওয়ামী লীগ যুগপৎ আন্দোলন করেছিল । একটি সুষ্ঠু পদ্ধতিতে নির্বাচনের জন্য যখন কোন ফর্মুলাই কাজে আসছিল না । তখন গোলাম আজম কেয়ারটেকার পদ্ধতি আবিষ্কার করলেন । কিছুটা বিরোধীতা থাকলেও একটা পর্যায় সকলেই বলতে বাধ্য হন এর থেকে ভাল দ্বিতীয় কোন পথ নেই । দেশে-বিদেশে উচ্ছসিত প্রশংসা  পায় । যারা একটা সময় এক সাথে আন্দোলন করে কেয়ারটোকার পদ্ধতি চালু করলেন আবার সেই তারাই তাদের স্বার্থে সেটার বিলুপ্তি করে দেন । যার খেসারত আজো দিচ্ছে বাংলাদেশ । যে গণতন্ত্র উত্তরণে ৯০-এ তার কেযারটেকার পদ্ধতি জাতিকে দিয়েছিল মুক্তির দিশা । কিন্তু অবাক করার বিষয় হচ্ছে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পথিকৃৎ মনে করা হয় বাংলাদেশকে। এ ব্যবস্থা চালু করে বাংলাদেশ এক সময় বিশ্বে প্রশংসা কুড়িয়েছিল। আওয়ামী লীগ এ ব্যবস্থার জন্য কৃতিত্ব দাবি করলেও এই দলটিই আবার ব্যবস্থাটি বাতিল করে দিয়েছে, যার জের ধরে বাংলাদেশ রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার সংবিধান পরিবর্তন করে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করে দিলেও নেপাল, পাকিস্তান, তিউনিশিয়া সহ বহু দেশই এখন এ ব্যবস্থাকে গ্রহণ করেছে। সর্বশেষ এই তালিকায় যোগ হচ্ছে তুরস্কের না ”‍‍‌‌‌‌‌‌   
                কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থা সম্পর্কে বৃটেনের হাউজ অব কমন্সের সাবেক স্পীকার মি: লর্ড ওয়েদারিল (Lord Weatherill) বার্তা সংস্থা ইউএনপির সাথে ২রা সেপ্টেম্বর ১৯৯৫ সালে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, আমি এই ধারনাকে (কেয়ারটেকার সরকার) সমর্থন করি। ইহা চালু করতে পারলে বাংলাদেশ এই ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী একটি মডেল হবে। বিশেষ করে পূর্ব ইউরোপেরই নয়, অন্যত্র বহু নতুন গণতান্ত্রিক দেশ রয়েছে যাদের বেলায় এটি খুবই উপযুক্ত বিজ্ঞ ধারণা হতে পারে। ১৯৯১ সালের জাতীয় নির্বাচনে বাংলাদেশের এর প্রয়োগের পর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানে এর প্রয়োগ হয়। ১৯৯৩ সালে পাকিস্তানে মঈন কোরেশীর নেতৃত্ব কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। পাকিস্তান সংবিধানের ৪৮(৫) অনুচ্ছেদে নির্বাচনের সময় প্রেসিডেন্ট কর্তৃক সংসদ ভেংগে দেয়ার পর কেয়ারটেকার কেবিনেট গঠনের বিধান রাখা হয়েছে। একই বছরে কম্বোডিয়ার গৃহযুদ্ধরত বিভিন্ন পক্ষের সমঝোতার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত হয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার। ১৯৯৪ সালে একটি অন্তর্বর্তীকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হয় এবং নির্বাচন হওয়ার পর ইহা স্থায়ী আইনে পরিণত হয়। ১৯৯৫ সালের আফ্রিকার মোজাম্বিক ও আমেরিকার হাইতিতে তত্তাবধায়ক করকারের অধীনেই নির্বাচন হয়। গ্রীসেও নির্বাচনকালীন কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থা গৃহীত হয়। আফগানিস্তানে একসময় তৎকালীন সর্ববৃহৎ দল হেজবে ইসলামীর প্রধান নেতা গুলবুদ্দিন হেকমতিয়ার এক বিদেশী পত্রিকার সাথে সাক্ষাৎকারে আফগান গৃহযুদ্ধ সমস্যার সামাধানের জন্য বাংলাদেশের মত তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করা উচিত বলে অভিমত প্রকাশ করেছিলেন। এভাবে দেখা যায়, বাংলাদেশে কেয়ারটেকার সরকার গঠনের দৃষ্টান্তটি বহু আন্তর্জাতিক সমস্যা সমাধানে সাফল্যজনক ভাবে ব্যবহৃত হয়েছে। এটা বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গৌরবের বিষয়।  
                 উক্ত কেয়ারটেকার সরকারের ধারণা বাংলাদেশে সর্বপ্রথম প্রদান করেন জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের আমির অধ্যাপক গোলাম আজম। তিনি এই কেয়ারটেকার সরকারের ফর্মুলা জামায়াতে ইসলামীর সর্বোচ্চ ফোরাম কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদে ১৯৭৯ সালে পেশ করেন। সেখানে বিস্তারিত আলোচনাক্রমে উক্ত ফর্মুলা গৃতীত হয়। তারপর ১৯৮০ সালের ৭ই ডিসেম্বর জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমীর আব্বাস আলী খান ঢাকার রমনা রেস্তোরায় আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে নতুন রাজনৈতিক পদ্ধতি হিসাবে কেয়ারটেকার সরকার পদ্ধতি উপস্থাপন করেন। ১৯৮০ সালের ৮ই ডিসেম্বর দৈনিক সংবাদে সংক্ষিপ্তাকারে উক্ত সংবাদ পরিবেশন করে বলা হয়- এই দাবীকে নতুন রাজনৈতিক পদ্ধতি হিসাবে জামায়াত আখ্যায়িত করে । ঐ তারিখে দৈনিক সংগ্রামে খবরটি বিস্তারিত প্রকাশিত হয়। এরপর ১৯৮৩ সালের ২০শে ডিসেম্বর বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে আয়োজিত এক গণজমায়েতে আব্বাস আলী খান কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবী জানান। ১৯৮৪ সালের এপ্রিল মাসে জেনারেল এরশাদের সাথে যে সংলাপ চলে সেখানেও জামায়াতে ইসলামী উক্ত ফর্মুলা পেশ করে। তখন প্রধান প্রধান দলগুলো উক্ত দাবীর সাথে একমত হয়নি। পরে ১৯৯০ সালে যখন অন্যান্য বিরোধীদল নিজস্ব পরিভাষাসহ জামায়াতে ইসলামীর উক্ত দাবীর সাথে একমত হয়ে আন্দোলন পরিচালনা করে তখন এক গন-অভ্যুত্থানের সৃষ্টি হয়। ফলে ১৯৯০ সালের ৬ই ডিসেম্বর প্রেসিডেন্ট হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদ তৎকালীন প্রধান বিচারপতি শাহাবুদ্দীন আহমদের নিকট ক্ষমতা হস্তান্তরে বাধ্য হন। প্রধান বিচারপতি শাহাবুদ্দীন আহমদ পরিচালিত নির্দলীয় কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে ১৯৯১ সালের জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হিসাবে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হয়। ১৯৯১ সালের ৫ই এপ্রিল ৫ম জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন বসে। ৬ই আগষ্ট সংবিধানের দ্বাদশ সংশোধনী বিল ২০৭-০ ভোটে পাস হয়। দ্বাদশ সংশোধনীর সময় সংবিধানে কেয়ারটেকার সরকার পদ্ধতি সংযোজনের জন্য জামায়ত প্রস্তাব পেশ করে। কিন্তু তৎকালীন সরকারী ও বিরোধী দল কোনটিই সেই প্রস্তাব সমর্থন করে নাই। পরে সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশনে ২৯শে জানু., ১৯৯১ সালে জামায়তে ইসলামী বাংলাদেশের সেক্রেটারী জেনারেল ও জামায়াতের সংসদীয় দলের নেতা মওলানা মতিউর রহমান নিজামী কেয়ারটেকার সরকার বিল সংসদে উত্থাপন করেন। পরে দীর্ঘ প্রায় দুই বছর আন্দোলনের মাধ্যমে ১৯৯৬ সালের মার্চ মাসে নির্দলীয় কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থা বিএনপি সরকারের মাধ্যমে সংসদে পাশ হয়ে বাংলাদেশের সংবিধানসম্মত ব্যবস্খা হিসাবে গৃহীত হয়। অতএব জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ভাবে গৃহীত ও বহুবিধ রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানে সফল নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থা নির্দলীয় কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থার উদ্ভাবক ও অগ্রবর্তী বাস্তবায়নকারী হিসাবে জামায়াতে ইসলামীর অবদান অনস্বীকার্য।

Saturday, December 31, 2016

অধ্যাপক গোলাম আযমের ফর্মুলায় নোবেল বিজয় - মুহাম্মদ ইয়াছিন আরাফাত

মুহাম্মদ ইয়াছিন আরাফাত, ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রাক্তন সভাপতি,  প্রাক্তন নির্বাহী সম্পাদক, মাসিক ছাত্রসংবাদ।   তার ওয়েবসাইট: https://yasinarafath.com। ইসলামী রেনেসাঁ আন্দোলন - (www.facebook.com/ira.rdv/ ) পেইজে ১৪ই অক্টোবর, ২০১৫ তারিখে উক্ত শিরোনামে তার একটি প্রবন্ধ পোষ্ট করা হয়। এই পোষ্টটি নীচে দেয়া হলো:
        এ বছর শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছে উত্তর আফ্রিকার দেশ তিউনিসিয়ায় গণতান্ত্রিক উত্তরণে সহায়তাকারী নাগরিক সমাজের চারটি সংগঠন। ২০১১ সালে তিউনিসিয়ার স্বৈরশাসন বিরোধী গণবিপ্লবের পর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করার জন্য এই চার সংগঠনকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। শান্তির মুকুটজয়ী নাগরিক সমাজের এ সংগঠনগুলো একত্রে ‘ন্যাশনাল ডায়ালগ কোয়ার্টেট’ নামে পরিচিত। পুরস্কৃত সংগঠন চারটি হচ্ছে তিউনিসিয়ান জেনারেল লেবার ইউনিয়ন(ইউজিটিটি), তিউনিসিয়ান এমপ্লয়ার্স ইউনিয়ন(ইউটিআইসিএ), তিউনিসিয়ান হিউম্যান রাইটস লিগ (এলটিডিএইচ) ও তিউনিসিয়ান অর্ডার অব লইয়ার্স। তিউনিসিয়ায় নাজুক ঐ পরিস্থিতিতে দেশটিকে সম্ভাব্য গৃহযুদ্ধের হাত থেকে বাঁচাতে অধ্যাপক গোলাম আযমের ফর্মুলা “কেয়ারটেকার সরকার পদ্ধতি" প্রতিষ্ঠা করে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তরের ক্ষেত্রে এই চারটি সংগঠন বলিষ্ঠ ভুমিকা পালন করে।
       পুলিশি হয়রানি ও বেকারত্বের প্রতিবাদে একতরুণের শরীরে আগুন লাগিয়ে আত্মাহুতির ঘটনার জের ধরে ২০১১ সালের জানুয়ারিতে তিউনিসিয়ায় অস্থিরতা দেখা দেয়। শুরু হয় একনায়ক জাইন আল আবেদিন বেন আলীর বিরুদ্ধে গণবিক্ষোভ। গণতন্ত্রকামী মানুষের টানা আন্দোলনের ফলে ওই বছরই পদত্যাগে বাধ্যহন ১৯৮৭ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করা বেন আলী।
        বেন আলীর পতনের পর গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার জন্য উন্মুখ তিউনিসিয়ায় বড় ধাক্কা আসে ২০১৩ সালের জুলাইয়ে। তখন বিরোধীদলীয় এক নেতা অস্ত্রধারীদের গুলিতেনিহত হন। ছয় মাসের মধ্যে সেটি ছিল তিউনিসিয়ায় দ্বিতীয় রাজনৈতিক হত্যা। এতে ২০১১-এর অক্টোবরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জয়ী দল এন্নাহদার নেতৃত্বাধীন জোটের পদত্যাগ দাবি করে বিরোধীরা।
           এরপর শুরু হয় ব্যাপক সহিংসতা ও বিক্ষোভ। এমন পরিস্থিতিতে বিবদমান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা গড়ায় নেতৃত্ব দেয় নাগরিক নেতাদের ওই চার সংগঠন। সকল রাজনৈতিক দলের সাথে সংলাপের মাধ্যমে আলাপ আলোচনা করে প্রতিষ্ঠা করা হয় একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার। নতুন নির্বাচনের আগ পর্যন্ত নির্বাচিত পার্লামেন্টকে কাজ করে যেতে দেওয়ার ব্যাপারে সম্মত হয় সকল রাজনৈতিক দল। নতুন সংবিধান রচনার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন শেষে ২০১৪-এর জানুয়ারিতে পদত্যাগ করে এন্নাহদা সরকার।এরপর সে বছরই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধিনে অনুষ্ঠিত হয় সাধারণ নির্বাচন। তত্বাবধায়ক সরকার ব্যাবস্থার মাধ্যমে অনুষ্ঠিত সেই নির্বাচন তিউনিসিয়ার গণতন্ত্রে উত্তরণে গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে ভুমিকা রাখে।
      উল্লেখ্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার এ চমৎকার পদ্ধতি ৮০’র দশকে বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর মরহুম অধ্যাপক গোলাম আযম। তিনি বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেটে জামায়াত আয়োজিত এক জনসভায় এ ফর্মুলা পেশ করেন।
(দ্রষ্টব্য: অধ্যাপক গোলাম আজমের পক্ষ থেকে আব্বাস আলী খান বাইতুল মোকাররমের ঐ জনসভায় কেয়ারটেকার সরকারের ফর্মুলা উপস্থাপন করেন।)

See this video: 



Popular Posts