Showing posts with label Bangladesh Jamaat-e-Islami. Show all posts
Showing posts with label Bangladesh Jamaat-e-Islami. Show all posts

Sunday, December 29, 2019

Bangladesh Jamaat-e-Islami: সংগঠন, নিউজ পেপার-ম্যাগাজিন, ইসলামিক ই-বুক,, ওয়েবসাইট, ইসলামিক ইউটিউব চ্যানেল এবং ফেসবুক পেজ-গ্রুপ সম্পর্কিত সকল লিংক



Official Website:

News Paper and Megazine:




Islamic Youtube Chanels:




Facebook Page and Group:

https://www.facebook.com/BJI.Official/


www.facebook.com/ArchiveBangladeshJamaateIslami/

Jamaat Dhaka City North

Jamaat Dhaka City South


Un-official:

Wednesday, July 17, 2019

সাবেক আইন প্রতিমন্ত্রী ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীর উত্তম-এর জামায়াত নিয়ে চাঞ্চল্যকর মন্তব্য


সাবেক আইন প্রতিমন্ত্রী ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীর উত্তম জামায়াত নিয়ে চাঞ্চল্যকর মন্তব্য করেছেন ফেসবুকে। ব্যারিষ্টার শাহজাহান মুক্তিযুদ্ধের সময় অসামান্য অবদানের জন্য বীর উত্তম খেতাব পান। তিনি বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা।
ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীর উত্তম গত ১৬ জানুয়ারী ২০১৪ তার ফেসবুক ষ্টাটাস দেন এভাবে,

I personally do not like Jamaat mainly because of their role in 1971. But at this moment when I can see almost all the journalists and intellectuals are talking lie against Jamaat than I feel I need to tell the truth. After talking with several people of several places I came to know that terrorism is being done by AL just to blame Jamaat. Moreover, after studying a lot and analyzing the current attitude of India I am convinced that 1971 war was created by India and it was a RAW project. AL and media are talking against Jamaat because Jamaat is the only organized force which can counter the Indian hegemony. The enemy of our independence in 1971 is turned to be best protector of our independence. So despite my disaproval to Jamaat politics I feel this party need to be exists as a safegurd of our independence. India has purchased our journalists, politicians, writers and army but failed to purchase Jamaat.

বাংলা করলে দাড়ায়,

১৯৭১ সালের ভূমিকার জন্য ব্যক্তিগতভাবে আমি জামাতকে পছন্দ করি না। কিন্তু বর্তমানে যখন দেখি প্রায় বেশির ভাগ সাংবাদিক এবং বুদ্ধিজীবী জামাতের বিরুদ্ধে মিথ্যা বলছে তখন আমার সত্যটাকে উদঘাটন করাটা দরকার। বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন মানুষের সাথে কথা বলে আমি জানতে পেরেছি যে জামাতকে দোষারূপ করার হীন স্বার্থেই আওয়ামী লীগ বিভিন্ন জায়গায় সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা করছে। অধিকন্তু ভারতের বর্তমান দৃষ্টিভঙ্গি বিশ্লেষণ এবং গভীর অধ্যায়ন করে উপলব্ধি করলাম যে, ৭১ এর স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের 'র' এর হাত ছিল। আওয়ামী লীগ এবং মিডিয়া জামাতের বিরুদ্ধে কথা বলছে কারণ জামাতই একমাত্র সুসংগঠিত দল যা ভারতীয় প্রভুত্ব ও কর্তৃত্বের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে পারে। ৭১-এ আমাদের স্বাধীনতার শত্রুরা আজ স্বাধীনতার রক্ষক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। তাই জামাতের রাজনীতিতে আমার অসমর্থন থাকা সত্ত্বেও আমি অনুভব করি যে আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের অতন্ত্র প্রহরী হিসেবে এই দল থাকাটা অত্যন্ত জরুরী। ভারত আমাদের সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ, লেখক এবং সেনাবাহিনী কিনতে পারলেও জামাতকে কিনতে ব্যর্থ হয়েছে।

Thursday, June 13, 2019

এতকিছুর পরও জামায়াতের লোকদের সম্পর্কে মানুষের মনে বিরূপ ধারণা নাই - সাংবাদিক মাহফুজুল্লাহ


মাহফুজ উল্লাহ (১০ মার্চ ১৯৫০-২৭ এপ্রিল ২০১৯) ছিলেন একজন বাংলাদেশি লেখক, সাংবাদিক, টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব ও পরিবেশবিদ। বাংলাদেশে তিনিই পরিবেশ সাংবাদিকতার সূচনা করেন। ছাত্রাবস্থাতেই মাহফুজ উল্লাহ সাংবাদিকতা পেশায় কাজ শুরু করেন। ১৯৭২ সালে সাপ্তাহিক বিচিত্রার জন্মলগ্ন থেকেই এ পত্রিকার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। মাঝে চীন গণপ্রজাতন্ত্রে বিশেষজ্ঞ হিসেবে, কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপদূতাবাসে কাজ করেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ এবং সাংবাদিকতা বিভাগে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকতা করেন। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের নেতৃস্থানীয় বাংলা ও ইংরেজি দৈনিকে কাজ করেছেন। রেডিও ও টেলিভিশনে অনুষ্ঠান উপস্থাপনাসহ একাধিক টক শো অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে সংবাদ  রাজনীতি নিয়ে নানামুখী বিশ্লেষণ করতেন। মৃত্যুর পূর্বে তিনি ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিভাগে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি সেন্টার ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট নামে একটি পরিবেশবাদী সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত একজন সক্রিয় পরিবেশবিদ ছিলেন এবং বাংলাদেশে তিনিই পরিবেশ সাংবাদিকতার সূচনা করেন। এছাড়ও তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটর এবং আন্তর্জাতিক পরিবেশবাদী সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার-এর আন্তর্জাতিক পরিচালনা পর্ষদের প্রথম বাংলাদেশী সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন।

Tuesday, March 26, 2019

বিশ্বখ্যাত আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী : বাংলাদেশসহ পৃথিবীব্যাপী তাঁর অভিযাত্রা

সংকলনে: শাহাদাতুর রহমান সোহেল


আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী (হাফেজাহুল্লাহ) বাংলাদেশে অত্যন্ত পরিচিত ব্যক্তি, বিশ্ব ইসলামী আন্দোলনে সুপ্রসিদ্ধ ইসলামী ব্যক্তিত্ব। বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী ইসলাম ও ইসলামী আন্দোলনের জন্য তার ব্যাপক তৎপরতার আলোচনা এই স্বল্প পরিসরে দেওয়া দুঃসাধ্য।  আল্লামা সাঈদী সম্পর্কে সামগ্রিকভাবে একটি খন্ডচিত্র সমাহার এখানে দেওয়া হলো:

১) আল্লামা সাঈদী’র সবচেয়ে বড় পরিচয় হলো তিনি প্রায় ৫০ বছর মহাগ্রন্থ আল কুরআনের তাফসীর পেশকারী। তিনি বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলসহ দেশ-বিদেশে অসংখ্য স্থানে তিনি তাফসীরুল কোরআন মাহফিল করেছেন। সেসব সিডি-ডিভিডি'র মাধ্যমে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে । দল-মত নির্বিশেষে সারা পৃথিবীর বাংলাভাষীদের মধ্যে তা ইসলামী জাগরণ সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। সেসব থেকে কিছু কিছু অংশ বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদও হয়েছে।

২) সৌদি আরবের মহামান্য বাদশাহ কর্তৃক ইরাক-ইরান যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে যে কমিটি গঠন করা হয়েছিল আল্লামা সাঈদীকেও উক্ত কমিটিতে অর্ন্তভুক্ত করা হয়। আর তিনি যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে প্রচেষ্টা চালান।  

৩) আল্লামা সাঈদী ইরাক- কুয়েত যুদ্ধের মীমাংসা বৈঠক আমন্ত্রিত মেহমান।

৪) আল্লামা সাঈদী ইরানে ইসলামী বিপ্লবের প্রথম বার্ষিকীর আমন্ত্রিত মেহমান।  ১৯৮৩ সালে আয়াতুল্লাহ খোমিনীর আমন্ত্রনে ইরানের বিভিন্ন এলাকা সফর করে তিনি বিভিন্ন মাহফিলে কোরআনের তাফসীর পেশ করেন এবং বিভিন্ন সেমিনার-সিম্পোজিয়ামে প্রধান অতিথি হিসাবে অংশগ্রহণ করেন।

৫) আল্লামা সাঈদী ১৯৮৩ সালে তিনি মিশরের আল-আজহার ইউনিভাসির্টিতে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন। হার্ভার্ড, অক্সফোর্ডসহ আন্ত্রর্জাতিক বিভিন্ন সেমিনারে তিনি আমন্ত্রিত অতিথি। ওকলাহামা, ইউস্টন, ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি মালয়েশিয়াসহ দেশ-বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি  বক্তব্য রাখেন। দণি গোলার্ধের অষ্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ণ ইউনিভার্সিটিতে, উত্তর গোলার্ধের কানাডার টরেন্টো ও মন্ট্রিয়েল ইউনিভার্সিটিসহ পৃথিবীর পাঁচটি মহাদেশে তিনি মাহফিল করেছেন।

৬) পৃথিবীর প্রায় পঞ্চাশটি দেশে বিভিন্ন সংগঠন ও সংস্থার আহবানে ইসলামের দাওয়াতী কাজে ভ্রমন করেছেন।

৭) আগষ্ট’৯১-এ ইসলামিক সার্কেল অব নর্থ আমেরিকা কর্তৃক আল্লামা সাঈদীর আল্লামা খেতাব ও জুলাই ৯৩-এ নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত আমেরিকান মুসলিম ডে প্যারেড সম্মেলন 'গ্র্যান্ড মার্শাল' পদক প্রাপ্তি উল্লেখযোগ্য।

৮) ইউরোপের সবচেয়ে বড় ইসলামী প্রতিষ্ঠান হলো লন্ডন মুসলিম সেন্টার (এল এম সি)। ১১০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ বিশাল মসজিদ ও কমপ্লেক্সের অর্থ সংগ্রহে তিনি প্রত্য অবদান রাখেন। এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কাবা শরীফের সম্মানিত ইমাম শায়েখ আব্দুর রহমান আস-সুদাইসির সাথে মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীও সেখানে আমন্ত্রিত হন।

৯) ১৯৯০ সলে মাওলানা সাঈদী প্যারিসে অনুষ্ঠিত ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ব্যাংকিং সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন।

১০) সৌদি বাদশাহর মেহমান হিসাবে হজ্জ্ব পালনকারী ব্যক্তি। আল্লামা সাঈদী সর্বপ্রথম হজ্জ্ব পালন করেন ১৯৭৩ সালে । এরপর তিনি ১৯৮৩ ও ১৯৮৫ সালে সৌদি বাদশাহ ফাহদ বিন আবদুর আজিজের রাজকীয় মেহমান হিসাবে হজ্জ্ব পালন করেন। রাবেতা আলম আল ইসলামীর মেহমান হিসাবে তিনি পাঁচবার হজ্জ্ব পালন করেছেন।

১১) সৌদি বাদশার আমন্ত্রনে নব্বই দশক থেকে বহু বছর কাবা শরীফে রমজানের শেষ ১০ দিন ইতেকাফকারী।

১২) ১৯৯৩ সালে মাওলানা সাঈদী সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রধানমন্ত্রী ও দুবাই শাসকের আমন্ত্রণে দুবাই সফর করেন। প্রধানমন্ত্রী আয়োজিত ‘‘দুবাই ইন্টারন্যাশনাল হলি কুরআন এওয়ার্ড’’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। ৫০ হাজারেরও বেশি শ্রোতার সামনে তিনি বক্তৃতা করেন যা দুবাই টেলিভিশন সরাসরি সম্প্রচার করে। বিগত অক্টোবর ২০০৮ সালে দুবাইয়ের ন্যাশনাল ঈদ গ্রাউন্ডে দুবাই ইন্টারন্যাশনাল হোলি কোরআন এ্যাওয়ার্ড কমিটি কর্তৃক আয়োজনে আল্লামা সাঈদীর বিশাল মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এই মাহফিলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন আরব আমিরাতের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও দুবাইয়ের শাসক শায়খ মোহাম্মাদ বিন রাশেদ আল মাকতুম। মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাসে এটি ছিলো উল্লেখযোগ্য গণজমায়েত। উপস্থিত অর্ধলাধিক দর্শক- শ্রোতাদের উদ্দেশ্যে তাঁর বক্তব্যের বিষয় ছিলো 'পবিত্র কোরআনের বিজ্ঞানময় মু'জিজা'। দুবাই সরকার তাঁর দুই ঘন্টার উক্ত বক্তব্য সিডি, ভিসিডি করে বিনামূল্যে বিতরণের ব্যবস্থা করেছে। অনুরূপ মাহফিল হলো সাউদী আরবের রাজধানী রিয়াদে। জেদ্দা, তায়েফ, দাম্মাম এবং পবিত্র মক্কা- মদীনায়।

একই ধরনের মাহফিল হলো গ্রীসের রাজধানী এথেন্স, নগরীর আলেকজান্দ্রা ষ্টেডিয়ামে, ইটালীর রাজধানী রোমে, ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে, স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদে, পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে, জার্মানীর রাজধানী ফ্রাঙ্কফুটে, জাপানের রাজধানী টোকিওতে, কোরিয়ার রাজধানী সিউলে, অষ্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায়, মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে, থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে, সিঙ্গাপুরে, ইরানের রাজধানী তেহরানে এবং কুুয়েত, কাতার, ওমান, বাহরাইন, মিশরসহ মধ্যপ্রাচ্যের প্রায় সবগুলো দেশে।

আল্লামা সাঈদীর মাহফিলে অগণিত জনতার উপস্থিতির দৃশ্য সেসব দেশের টিভি চ্যানেলগুলোয় সরাসরি সম্প্রচার করে থাকে। একই ধরনের মাহফিল হয়েছিলো আমেরিকার নিউইয়র্ক শহরে জাতিসংঘের সামনে ৪২ নং সড়কে এবং আমেরিকার রাজধানী ওয়াশিংটনসহ উক্ত দেশের ২২টি অঙ্গরাজ্যে। ইউরোপের ইংল্যান্ডের রাজধানী লন্ডনসহ গ্রেটবৃটেনের অনেক শহরে তিনি বহু বছর ধরে মাহফিল করেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের ১১টি দেশে তিনি সফর করেছেন।

১৩) আল্লামা সাঈদী বহু গ্রন্থ প্রনেতা। আল্লামা সাঈদী ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ে ৬৮টি গ্রন্থ রচনা করেন। এর মধ্যে কিছু গ্রন্থ ইংল্যান্ড ও আমেরিকায় ইংরেজীতে প্রকাশিত হয়েছে।

১৪) আল্লামা সাঈদী ইসলামের সৌন্দর্য দিয়ে দুইহাজারের অধিক অমুসলিমকে মুসলিম বানানো এক মহা পুরুষ।

১৫) মওলানা সাঈদী ১৯৪০ সালের ২ ফেব্রুয়ারী পিরোজপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মওলানা ইউসুফ সাঈদী দণিাঞ্চলের একজন শৈল্পিক বক্তা ও পীর। তিনি নিজ গ্রামে পিতার নির্মিত মাদ্রাসা হতে প্রাথমিক শিা গ্রহণ করেন এরপর তিনি শরসিনা আলিয়া ও খুলনা আলিয়া মাদ্রাসায় অধ্যয়ন করেন। ১৯৬২ সালে শর্সিনা আলিয়া মাদ্রাসা হতে কামিল ডিগ্রী অর্জন করেন। এরপর তিনি বিভিন্ন বিষয়ে ও তত্বের উপর অধ্যয়ন করেন। তিনি ভাষা, ধর্ম, দর্শন, বিজ্ঞান, রাজনীতি, অর্থনীতি, রাষ্ট্রনীতি, পররাষ্ট্রনীতি, মনোবিজ্ঞানের মত বিষয়গুলো প্রায় পাঁচ বছর অধ্যয়ন করেন।

১৬) আল্লামা সাঈদী ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ছিলেন। তার এলাকার অনেক মুক্তিযোদ্ধা তার ইমামতিতে ঈদের নামাজ আদায় করেন এবং মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের জন্য তিনি দোয়া করেন। ২০১০ সালে মওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন পিরোজপুরের সাবেক সংসদ সদস্য, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক যুগ্ম মহাসচিবসহ বৃহত্তর বরিশালের ৫১ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা। বাংলাদেশ ডাক বিভাগের গ্যারান্টিড এক্সপ্রেস পোস্টের মাধ্যমে এ স্মারকলিপি পাঠানো হয়েছে। 

স্মারকলিপিতে স্বারকারী মুক্তিযোদ্ধারা হলেন পিরোজপুর-১ আসনের সাবেক এমপি ও মুক্তিযুদ্ধকালীন কমান্ডার গাজী নুরুজ্জামান বাবুল, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব শামছুল আলম তালুকদার, সাবেক পৌর চেয়ারম্যান মো. লিয়াকত আলী শেখ বাদশা, পৌরসভা কাউন্সিলর আবদুস সালাম বাতেন, সাবেক কমিশনার আবদুর রাজ্জাক মুনান, খসুল আলম, খন্দকার রেজাউল আলম শানু, অ্যাডভোকেট শেখ আবদুর রহমান, হাবিবুর রহমান বাহাদুর, আবদুস সালাম হাওলাদার, মোশাররফ হোসেন, আবু তালেব সেপাই, ডা. আলতাফ উদ্দিন আহমেদ, আবুল হোসেন তালুকদার, মোকাররম হোসেন কবীর, প্রকৌশলী মতিউর রহমান, অধ্যাপক ফরহাদ মুন্সি প্রমুখ।

মহান মুক্তিযুদ্ধে নবম সেক্টরের সাব-সেক্টর কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব:) জিয়াউদ্দীন আহমদ বলেন, ‘১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধে সাঈদী স্বাধীনতাবিরোধী, রাজাকার, আল বদর, আল শাম্স, শান্তি কমিটির সদস্য বা যুদ্ধাপরাধী ছিলেন না। এসবের তালিকায় কোথাও তার নাম নেই।’

মহান মুক্তিযুদ্ধে নবম সেক্টরের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল আলম তালুকদার বলেন, ‘আমি দৃঢ়তার সাথে বলতে চাই, আল্লামা সাঈদীর বিরুদ্ধে দায়েরকৃত যুদ্ধাপরাধ তত্ত্ব-উপাত্ত ও সাী সবই মিথ্যার ওপরে প্রতিষ্ঠিত। কারণ আমরা নবম সেক্টরের সাব-সেক্টর কমান্ডার মেজর (অব:) জিয়াউদ্দিন আহমদের নেতৃত্বে পিরোজপুরে হানাদার বাহিনীর সাথে সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করি ও পিরোজপুরকে শত্রুমুক্ত করি। তিনি স্বাধীনতাবিরোধী কোন কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করেছেন বলে আমাদের জানা নেই। মুক্তিযুদ্ধে তার মানবতাবিরোধী, স্বাধীনতাবিরোধী কোনো ভূমিকা থাকলে তা আমাদের আগে বা আমাদের চেয়ে বেশি অন্য কারো জানার কথা নয়। সম্পূর্ণ রাজনৈতিক কারণেই তাকে যুদ্ধাপরাধী বলা হচ্ছে।’

মুক্তিযোদ্ধা মোর্কারম হোসেন কবির, পিতা: এ,এম হাসান, গ্রাম-শংকরপাশা, থানা-জিয়ানগর, জেলা-পিরোজপুর সহ আরো অনেকে সাক্ষ্য দেন আল্লামা সাঈদী মুক্তিযোদ্ধের পক্ষে ছিলেন। মুক্তিযোদ্ধা মোর্কারম হোসেন কবির “আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী: যুদ্ধাপরাধ নয়, জনপ্রিয়তাই যার অপরাধ” নামে একটি বইও লিখেছেন। এই বইটি ইংরেজীতেও অনুদিত হয়েছে। এই বইটি মাসুদ সাঈদীর তত্বাবধানে তৈরী এপ্লিকেশন - Allama Sayedee at a glance -এও দেওয়া হয়েছে।

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের মাত্র দুই মাস সাত দিন পর ১৯৭২ সালের ২২  ফেব্রুয়ারী মাওলানা সাঈদী তাঁর নিজের জেলা পিরোজপুর শহরে সীরাত মাহফিলে ওয়াজ করেন। এরপর থেকে সমগ্র দেশব্যাপী ও বিদেশে একটির পর একটি মাহফিলে আমন্ত্রিত হতে থাকেন। স্বাধীনতার পর কট্টর সেকুলার ও বামপন্থীদের ইসলামবিরোধী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে তিনি মরণপণ প্রতিবাদ শুরু করেন। এতে এদেশের ইসলামপ্রিয় জনতার মধ্যে তার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায়। ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারী মাসের শেষ নাগাদ পাবনার এডওয়ার্ড কলেজ ময়দানে মুক্তিযোদ্ধাদের আয়োজনে মাহফিলে কোরআনের তাফসীর করেন। এই মাহফিলে তাকে লক্ষ্য করে বামপন্থীরা কয়েক রাউন্ড গুলি বর্ষণ করেন। গুলিবর্ষণকালে এক মুহূর্তের জন্যও তার কথা বন্ধ হয়নি। এই বিপদসংকুল সময়ে তিনি জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করেন এবং ১৯৭৩ সালে জামায়াতের রোকন হন। জামায়াতে ইসলামীর এক চরম ক্রান্তিকালে আল্লামা সাঈদী জামায়াতে যোগ দেন এবং এর রোকনিয়াত গ্রহণ করেন। কাজেই যারা হুমকি ও প্রলোভন দিয়ে এই ইসলামী আন্দোলন থেকে তাঁকে বিচ্যুত করতে চায় চরম বোকা ছাড়া আর কিছু নয়। মহান আল্লাহ আল্লামা সাঈদীকে সবরে জামিল এক্তিয়ার করার তৌফিক দান করুন, আমিন।

১৭) আল্লামা সাঈদী একজন জননন্দিত নেতা। ১৯৯৬ সালে তিনি পিরোজপুর সদর উপজেলা হতে জাতীয় সংসদের সদস্য নিবাচিত হন। তিনি ১৯৯৬ সালে জামায়াতে ইসলামীর নির্বাচিত তিন জন সদস্যর সংসদীয় নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার বলিষ্ঠ বক্তৃতার মাধ্যমে তিনি তৎকালীন সরকারের সকল দুষ্কর্মের সমুচিত জবাব দেন। ২০০১ সালে তিনি পুনরায় সংসদ সদস্য নিবাচিত হন।

১৮) তিনি সক্রিয়ভাবে বিভিন্ন সমাজসেবা, শিামূলক ইত্যাদি নানা কাজের সাথে যুক্ত। তিনি রাবেতা আলম আল ইসলাম এর উপদেষ্টা, ইসলমী ব্যাংক বাংলাদেশ লিঃ-এর শরীয়াহ কাউন্সিলের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টি বোর্ড চট্রগ্রাম-এর উপদেষ্টা, জামিয়া দ্বীনিয়া টঙ্গী, জামিয়া কাসেমিয়া নরসিংদী, দারুল কুরআন সিদ্দিকিয়া আলিয়া মাদ্রাসা খুলনা দারুল হামান শিশু সদন, এস বি মদীনাতুল উলুম কামিল মাদ্রাসা পিরোজপুর এর চেয়ারম্যান। এছাড়াও তিনি দেশী ও বিদেশী উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সংগঠনের উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের আজীবন সদস্য।

১৯) আল্লামা বিভিন্ন েেত্র দায়িত্ব পালনের সাথে সাথে আল্লামা সাঈদী বিশ্ববিস্তৃত ইসলামী সংগঠন জামায়াতে ইসলামীর বিভিন্ন পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষে তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীরের দায়িত্ব পালন করেছেন।

২০) ২০০৬ এর ৭ই অগাস্ট, লন্ডন থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক ইউরো বাংলা পত্রিকার ৪৭ পৃষ্ঠায় আল্লামা সাঈদী সম্পর্কে একটি প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়। তাতে লেখা হয়েছে, 'পৃথিবীর প্রায় ২৫০ মিলিয়ন মানুষ বাংলাভাষায় কথা বলে। বাংলাভাষায় নিজের মনের ভাব প্রকাশ করে। বাংলাদেশ, ভারত ছাড়াও ইউরোপ, আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও দণি এশিয়ার বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এই বিশাল জনগোষ্ঠীর কাছে যিনি গত ৪০ বছর ধরে বিরতিহীনভাবে কুরআনের দাওয়াত পৌঁছানোর কাজ করে যাচ্ছেন তিনি হচ্ছেন আমাদের কালের একজন বড় মাপের কুরআনের পন্ডিত আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। শুধু বাংলাভাষা বা বাংলাদেশের কথাই বা বলি কেনো, আমাদের ইতিহাসে খুব কম মানব সন্তানই সুদীর্ঘ ৪ দশক ধরে এই অবিস্মরণীয় জনপ্রিয়তার শীর্ষদেশে অবস্থান করার বিরল সৌভাগ্য অর্জন করতে পেরেছেন। এদিক থেকে গোটা বিশ্ব পরিমন্ডলে আল্ল্ামা সাঈদী একটি বিশেষ স্থান দখল করে আছেন। মাঠে ময়দানে, পত্র পত্রিকায়, সেমিনার, সিম্পোজিয়ামে, রেডিও টেলিভিশনে এক সুদীর্ঘকাল ধরে সুললিত কণ্ঠে পবিত্র কুরআনের তাফসীর পেশ করার েেত্রও আল্লামা সাঈদীর বিকল্প কোনো ব্যক্তি আজকের মুসলিম বিশ্বে আছে কিনা সন্দেহ।' লন্ডনের সাপ্তাহিক ইউরো বাংলা পত্রিকায় প্রকাশিত এ লেখাটি আরো দীর্ঘ।

২১) সাঈদী বাংলাদেশের ইতিহাসে বিস্ময়কর জনপ্রিয় ব্যক্তি।  ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারীর কালো দিনে  যখন সাঈদীর ফাঁসির রায় দেওয়া হয় তখন এর প্রতিবাদে বিােভে দুই দিনে বাংলাদেশের ২৩৪ জন নারী-পুরুষ-শিশু শাহাদাৎ বরণ করেছিল ।  আর অসংখ্য ব্যক্তি আহত হয়েছিল। মাত্র ২দিনের বিােভে এই বিশাল সংখ্যক শাহাদাত বাংলাদেশের ইতিহাসে নাই। মাত্র এক ব্যক্তির জন্য এত ব্যাপক প্রতিক্রিয়া বিশ্ব ইতিহাসে বিরল। তার প্রতি বাংলাদেশের মানুষের এই ভালোবাসা অতুলনীয় । সাঈদীর পূত্র মাসুদ সাঈদীর একটি ইমেজ পোষ্ট এখানে দেওয়া  হলো:

তোমরা কার উপর অবিচার-জুলুম করেছ? কাকে বলছ ধর্ষক, খুনি রাজাকার?   আল্লাহ অবশ্যই আছেন - অবশ্যই আল্লাহর কাঠগড়ায় তোমাদের দাঁড়াতে হবেই ইনশা-আল্লাহ। এর মধ্যে তোমাদের অনেকে কবরে চলে গেছে। এরপরও কি তোমরা তওবা করবে না? হাদিসের ভবিষ্যদ্বাণী অনুসারে বিশ্বব্যাপী ইসলামের বিজয় অতি নিকটবর্তী। যদি তওবা না কর তোমরা নিকটবর্তী আগামী দিনের পৃথিবীর মানুষের কাছে তোমরা ঘৃণার পাত্র হয়ে থাকবে ইনশা-আল্লাহ।

সম্ভবমত সকল ব্যক্তি ও শক্তির সহায়তা নিয়ে আল্লামা সাঈদীর মুক্তির সংগ্রাম জোরদার করুন। আর সবাই দোয়া করি: হে আল্লাহ! হে রাহমানির রাহিম! হে কুন-ফায়াকুনের মালিক! হে সকল কল্যাণ-অকল্যানের মালিক! আল্লামা সাঈদীর মুক্তিদান করুন আর আল্লামা সাঈদীর মুক্তিকে বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বের ইসলামী আন্দোলনের জন্য কল্যাণকর করে দিন, আমীন।

Please browse this link: https://dhsaidy.blogspot.com


Monday, January 21, 2019

জামায়াতে ইসলামী ও অন্যান্য ইসলামী দলঃ একটি তুলনামূলক র্পযালোচনা



শাহাদাতুর রহমান সোহেল

পবিত্র কোরআনের র্নিদেশ হচ্ছেতোমার সংঘবদ্ধভাবে আল্লাহর রজ্জু (অর্থাৎ ইসলাম বা কোরআন) আকড়ে ধর এবং পরষ্পর বিচ্ছিন্ন হইও না।(সুরা আল-ইমরান-১০৩আ) আর হাদীসে আছে, হযরত হোযায়ফা (রা) বর্ণনা করেন, লোকেরা সাধারণতঃ ভবিষ্যতের নানা কল্যাণকর বিষয়ে প্রিয় নবীজির নিকট প্রশ্ন করতেন। আমি প্রশ্ন করতাম যেসবে অকল্যানের আশংকা রয়েছে সেই সব বিষয়। একদা আমি জিজ্ঞেস করলাম, ইয়া রাছুলুল্লাহ। আমরা জাহেলিয়াতের অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিলাম আল্লাহপাক আমাদেরকে ইসলামের আলোতে উদ্ভাসিত করে সে অন্ধকারের অভিশাপ থেকে মুক্ত করেছেন। এ কল্যাণকর অবস্থার পর কি কোন খারাপ দিন আবার আসবে? জবাব দিলেন, অবশ্যই আসবে। আমি আরজ করলাম, সে মন্দ দিনের পরও কি কোন কল্যাণকর সময়ের সাক্ষাত আমরা লাভ করতে পারব? বললেন, হ্যা, কল্যাণকর দিন আসবে, তবে সেটা নির্ভেজাল কল্যাণ হবে না, কিছু অকল্যাণের মিশ্রণ ও তাতে থাকবে। আমি জিজ্ঞেস করলাম: সে কল্যাণের স্বরূপ কি হবে? বললেন, এমন লোকের আবির্ভাব ঘটবে যারা (শাসনকার্য পরিচালনার ক্ষেত্রে) আমার তরিকা ত্যাগ করে অন্যদের তরিকা অনুসরণ করে চলবে। আমার প্রদর্শিত পথ ত্যাগ করে অন্য পথে লোকদের পরিচালিত করতে সচেষ্ট হবে। এরা ভাল কাজ করবে, তেমনি মন্দ কাজেও অভ্যস্ত হতে থাকবে। আবারও জিজ্ঞেস করলাম, এই মিশ্র কল্যাণকর অবস্থার পর আবারও কি কোন অকল্যাণ আসবে? এরশাদ করলেন, একশ্রণীর লোক জাহান্নামের দ্বারদেশে দাঁড়িয়ে লোকদেরকে তাতে প্রবেশ করার আহবান জানাতে থাকবে অর্থাৎ এমন সব ক্রিয়া কর্মের প্রতি লোকদেরকে প্ররোচিত করতে থাকবে যার পরিণতি হবে অনিবার্য জাহান্নামে বাস। যারা ঐ সব লোকদের দাওয়াতে সাড়া দেবে ওরা নিশ্চিতভাবেই জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে। আমি আরজ করলামইয়া রাছুলুল্লাহএ সম্পর্কে আমাদেরকে আরো কিছু বলুন এরশাদ করলেনএরা আমার উম্মতের পরিচয়ে পরিচিত হবে এবং আমাদের ভাষাতেই কথা বলবে আমি আরজ করলামযদি আমার জীবদ্দশাতেই সেই দুর্দিন এসে যায় তবে আমরা কি করবোএরশাদ করলেনইসলামী জামায়াত এবং তাদের আমীরের  নেতৃত্বকে আকড়ে থাকবে আরজ করলামযদি মুসলমানদের সুসংঘবদ্ধ কোন জামায়াত ও সঠিক নেতৃত্ব দানকারী আমীর না থাকেতবে আমাদের করণীয় কি হবেএরশাদ করলেন: তখন ঐ সমস্ত নতুন মত-পথ থেকে নিজেকে পৃথক করে প্রয়োজনে জনপদের বাইরে কোন বৃক্ষমূল কামড়ে হলেও ঈমান রক্ষার চেষ্টা করবে অর্থাৎ  গাছের পাতা ও মূল কামড়ে থেকেই তোমার ঈমান রক্ষার প্রয়াস পাবে" (বুখারী-মুসলিম শরীফ) অপর একটি হাদীসে রযেছেহযরত হারেসুল আশআরী(রাথেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেনহযরত নবী করিম সাইরশাদ করেছেন: আমি তোমাদিগকে পাঁচটি বিষয়ের আদেশ করছিতা এই - জামায়াতবদ্ধ জীবনআদেশ শ্রবণে প্রস্তুত থাকা ও নিয়ম-কানুন মেনে চলাহিজরত করা ও আল্লাহর পথে জিহাদ করা (মুসনাদে আহমাদতিরমিযি) উক্ত কোরআন-হাদীসের নির্দেশনার আলোকে বর্তমান জাহেলিয়াতের সামাজে মুসলমানদের উচিত কোন না কোন ইসলামী সংগঠন দ্বারা সংঘবদ্ধ হয়ে দ্বীন ইসলামকে মজবুতভাবে ধারণ করে ইসলামী জিহাদে (আন্দোলনেসক্রিয় থাকা এক্ষেত্রে বিভিন্ন ইসলামী সংগঠনের মধ্যে তুলনামূলক বিচার-বিশ্লেষণের মাধ্যমে বাছাই করে ইসলামী সংগঠন গ্রহণ করা উচিত এখানে জামায়াতে ইসলামীর সাথে বাংলাদেশের অন্যান্য ইসলামী সংগঠনের তুলনামূলক পার্থক্য তুলে ধরা হচ্ছেঃ

০১জামায়াতে ইসলামী ও এর সাথে সংশ্লিষ্ট আরবের ইখওয়ানুল মুসলেমীন বর্তমানে বিশ্বব্যাপী ইসলাম পূন:প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের আগ্রগামী সংগঠনকিন্তু অন্যান্য ইসলামী সংগঠন এক্ষেত্রে তার অনুসারী মাত্র পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে:- অগ্রবর্তীগণ তো অগ্রবর্তীই (সুরা ওয়াকিয়া১০ আয়াত) রাসুলুল্লাহ (সা:) এর ভবিষ্যদ্বাণী অনুসারে বিশ্বব্যাপী ইসলামের বিজয় হলে তখনকার নিরপেক্ষ ইতিহাস এক্ষেত্রে জামায়াতে ইসলামীকে অগ্রগামী সংগঠন হিসাবে স্বীকৃতি প্রদান করবে আর বর্তমান যুগের ইসলামী আন্দোলনের কাফেলায় পবিত্র কোরআনের ঘোষণা অনুসারে আখেরাতের ময়দানেও জামায়াতে ইসলামী অগ্রগামী থাকবে ইনশা-আল্লাহ। এসম্পর্কিত এই লিংকটি ব্রাউজ করুন প্লীজ: বিশ্বব্যাপী দ্বীন ইসলামের পূনরুত্থানে জামায়াতে ইসলামীর অবিস্মরণীয় সাফল্য 

০২অন্যান্য ইসলামী দল কোনটি ব্যক্তিভিত্তিককোনটি নির্দিষ্ট ধর্মীয় গোষ্ঠীভিত্তিককিন্তু জামায়াতে ইসলামী তা নয়ইহা এক সার্বজনীন ইসলামী আন্দোলন

০৩অন্যান্য বহু ইসলামী দলে ইসলামের পূর্ণাঙ্গ ও সর্বমূখী তৎপরতা নাইকিন্তু জামায়াতে ইসলামীতে তা রয়েছে

০৪জামায়াতে ইসলামী একই সাথে এককভাবে ধর্মীয়শিক্ষা-প্রশিক্ষণমূলকসামাজিকসাংস্কৃতিক এবং রাজনৈতিক সংগঠনকিন্তু অন্যান্য ইসলামী দল তদ্রুপ নয়

০৫সকল নবী-রাসুলকে প্রেরণ করা হয়েছে সমস্ত বাতিল জীবনবিধানকে উৎখাত করে দ্বীন ইসলাম কায়েম করার লক্ষ্যে (দেখুন- সুরা আশশুরা১৩ আয়াত)কিন্তু অন্যান্য ইসলামী সংগঠনে এব্যাপারে অটল দৃঢ়তা (এস্তেকামাতনাইকিন্তু জামায়াতে ইসলামী একামতে দ্বীনের সংগ্রাম প্রত্যক্ষভাবে এবং এস্তেকামাতের সাথে অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে আপোষহীন

০৬দ্বীনে হক কায়েমের সর্বোচ্চ লক্ষ্যে জামায়াতে ইসলামী একনিষ্ঠ আপোষহীনভাবে নিয়োজিত এজন্য সকল বাতিল শক্তিসমূহ জামায়াতে ইসলামীকে শত্রুই গণ্য করে থাকেকিন্তু অন্যান্য ইসলামী দল অনেক সময় অসংগত আপোষকামী অথবা নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে সেজন্য বর্তমানে তাদের সেই পরিমাণ শত্রু গণ্য করে না 

০৭জামায়াতে ইসলামীতে অন্তুর্ভুক্ত হয়ে কোন মুসলিম অন্য কোন বাতিলপন্থী অনৈসলামিক দল বা সংগঠনের সাথে সম্পর্ক রাখতে পারে না অর্থাৎ  অনৈসলামিক দল বা সংগঠনের অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে না।  জামায়াতে ইসলামী আল্লাহকে খুশী করার এবং শয়তানকেও নারাজ না করার ঈমানবিরোধী মোনাফেকী নীতিতে বিশ্বাসী নয় কিন্তু এমন জামায়াত বা গ্রুপ রয়েছে যাদের কার্যক্রমের সাথে পুরোপুরি থেকেও অনৈসলামিক দলের আন্দোলনেসংগ্রামে বা প্রচেষ্টায় পূর্ণরূপে থাকে যায়। এটা সুস্পষ্ট মোনাফেকী । কোরআনের ঘোষণা অনুসারে মোনাফেকের স্থান জাহান্নামের সবচেয়ে নীচে।  

০৮জামায়াতে ইসলামীতে সুসংহত বিজ্ঞানসম্মত কর্মসূচী রয়েছেকিন্তু অন্যান্য ইসলামী দলে তদ্রুপ নাই

০৯জামায়াতে ইসলামী ক্যাডার(মানগত স্তরবিন্যাস)ভিত্তিক সংগঠনকিন্তু অন্যান্য ইসলামী দল তা নয় প্রধানতক্যাডার(মানগত স্তরবিন্যাস)ভিত্তিক হওয়ায় জামায়াতে ইসলামীতে যে পরিমাণ ঐক্য ও শৃংখলা রায়েছে অন্যান্য ইসলামী সংগঠনে তা নেই

১০অন্যান্য বহু ইসলামী সংগঠনে নেতৃত্ব ও আনুগত্যের সুষম শৃংখলা নেই সহজে গ্রুপিং সৃষ্টি হয়ে ভাংগন ধরে ব্যক্তিত্বের দ্বন্দ্বকর্ম-কৌশলগত মতভেদ ইত্যাদিকে প্রাধান্য দেয়া হয় কিন্তু জামায়াতে ইসলামীতে নেতৃত্ব ও আনুগত্যের যথাযথ নিয়মানুবর্তীতা রয়েছে এবং এখানে যেকোন দ্বন্দ্বের কারণে সহজে গ্রুপিং সৃষ্টি বা ভাঙ্গন ধরে না


১১অন্যান্য বহু ইসলামী সংগঠনেই ইসলামী গণতান্ত্রিক পরিবেশের অভাব রয়েছেকিন্তু জামায়াতে ইসলামীতে তূলনামূলকভাবে উত্তম ইসলামী গণতান্ত্রিক পরিবেশ বিদ্যমান পরামর্শের ভিত্তিতে সংগঠন পরিচালনাযথানিয়মে সমালোচনা ও সংশোধনইসলামী নীতির আওতায় স্বাধীন মতামত প্রদান বা ভোটাধিকারের ভিত্তিতে নেতা নির্বাচন ইত্যাদি ইসলামী গণতান্ত্রিক উপাদান জামায়াতে ইসলামীতে রয়েছে


১২জামায়াতে ইসলামী গণ-মানুষের আধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেকিন্তু অন্যান্য ইসলামী দল অনেক সময় একে বস্তুবাদী আন্দোলন বলে নিন্দা প্রকাশ করে ও তা থেকে বিরত থাকে। রাসুলুল্লাহ(সা:) মাত্র সতের বছর বয়সে গণ-মানুষের অধিকার এবং সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে "হিলফুল ফুযুলগঠন করেছিলেন আর তখনই দ্বীপ্ত ঘোষণা প্রদান করেন- তায়াকাদু ওয়াতায়াহাদু বিল্লাহি লায়াকুনান্না মায়াল মাজলুমি হাত্তা ইয়ুয়াদ্দি ইলাইহি হাক্কাহু মায়াবাল্লাহ বাহরা সুফাতিনঅর্থাৎ আল্লাহর কসমসাগরে লোম ভেজানোর পরিমাণ পানি থাকা পর্যন্ত মজলুমের সাথে থেকে তার অধিকার আদায় করব হাদীসে বলা হচ্ছেসাইয়িদুল ক্বাউমি খাদেমুহুম. ফামান সাবাক্বাহুম বিল খিদমাতি লাম ইয়াসবিকুহু বিআমলিন ইল্লাশ শাহাদাতঅর্থাৎ জাতির নেতা তারাই যারা তাদের খেদমত করে কোন ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় শহীদ ছাড়া হওয়া ছাড়া অন্য কোন আমল ‌দিয়ে জাতির খেদমতে নিয়োজিত ব্যক্তির চেয়েে উচ্চ র্মযাদা লাভ করতে পারবে না " (বায়হাকীমেশকাত শরীফ)

১৩কোরআন-হাদীস বর্ণিত তাযকিয়ায়ে নফস তথা ইসলামী তাসাউফের লক্ষ্যে হলো মানুষকে ইসলামী খেলাফতের যোগ্য মোমেনীন সালেহীন রূপে গড়ে তোলা জামায়াতে ইসলামীর লোক গঠনের উদ্দেশ্যেও উহাই কাজেই এক্ষেত্রে জামায়াতে ইসলামী নীতিগতভাবে সঠিক অবস্থানে রয়েছে কোন কোন ইসলামী গ্রুপ তাযকিয়ার ক্ষেত্রে লক্ষ্যহীন আবার কোন কোন ইসলামী দলে লক্ষ্য থাকলেও সঠিক লক্ষ্যে সম্পূর্ণরূপে উপনীত নয়

১৪জামায়াতে ইসলামী গায়রে ইসলামী তাসাউফের উচ্ছেদনিম ইসলামী তাসাউফের সংশোধন এবং খালেছ ইসলামী তাসাউফের প্রতিষ্ঠাকামী জামায়াতে ইসলামী হকপন্থী সুফীদেরকে সমর্থন-সহযোগিতা করেবিশেষ করে হকের পথে সংগ্রামী সুফী-সাধকদেরকে সম্মান-শ্রদ্ধার চোখে দেখে আল্লামা সাইয়্যেদ আবুল আলা মওদুদী (রহ: )-এর ইসলামের শক্তির উৎসসহ আরো বিভিন্ন বইয়ে ইসলামের ইতিহাসে সুফীদের অবদানের স্বীকৃতি আছে এই সুফীদের মধ্যে বহু তরিকা চালু আছে জামায়াতে ইসলামী কোন সুফী তরিকার অনুসারী নয় তবে কোরআন-হাদীসসম্মত সকল তরিকা সমর্থনযোগ্য মনে করে বিভিন্ন তরিকার বহুসংখ্যক পীরমাশায়েখ বর্তমানে জামায়াতে ইসলামীর সমর্থনে অথবা অনুকুলে রয়েছে কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ময়দানে এমন একাধিক ইসলামী দল রয়েছে যারা সুফীবাদী নির্দিষ্ট তরিকার বাস্তবায়নে নিয়োজিত বা সমর্থক এক্ষেত্রেও জামায়াতে ইসলামী সার্বজনীন বৈশিষ্ট্যের অধিকারী

১৫জামায়াতে ইসলামীতে ব্যক্তিগত ও সাংগঠনিক কাজের রিপোর্টিংয়ের ব্যবস্থা আছে একে যথাযথভাবে কাজে লাগানো হলে তা সুচিন্তিত রুটিন হিসাবে কাজকে সুশৃংখল ও সহজ করে, এতে সংগঠনের উন্নতি  অবনতির যথার্থ পরিচয় পেয়ে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া যায় এবং আপন জনশক্তির নিকট কর্মসূচী সম্পর্কে ধারণা পরিস্কার থাকে অন্যান্য ইসলামী সংগঠনে এই রিপোর্টিংয়ের ব্যবস্থা নাই

১৬সুফীবাদী ইসলামী দলগুলো বিভিন্ন নফল কাজকে অজীফা হিসাবে আদায় করতে দেয় কিন্তু জামায়াতে ইসলামী নিজের কর্মীদেরকে ব্যক্তিগত রিপোর্ট বইয়ের মাধ্যমে কুরআন অধ্যয়নহাদীস অধ্যয়নইসলামী সাহিত্য অধ্যয়নজামায়াতে নামাজদাওয়াতী কাজকর্মী যোগাযোগআত্মসমালোচনাসামাজিক কাজ ইত্যাদি কাজের নির্দেশ দেয় যা বিভিন্ন কারণে অপেক্ষাকৃত বেশী গুরুত্বপূর্ণ

১৭ছাত্রশিক্ষককৃষকশ্রমিকপেশজীবিবুদ্ধিজীবিসাহিত্য-সংস্কৃতি ইত্যাদি সকল ক্ষেত্রে জামায়াতে ইসলামীর মজবুত অংগ সংগঠন বা সহযোগী সংগঠন রয়েছে কিন্তু অন্যান্য ইসলামী দলে তদ্রুপ নাই

১৮জামায়াতে ইসলামীর সহযোগী ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবির বিপুল পরিমাণে আধুনিক শিক্ষিত ছাত্রসমাজকে ইসলামী আন্দোলনে শরীক করতে পেরেছে কিন্তু অন্যান্য ইসলামী দলের ছাত্র সংগঠনের অবদান এক্ষেত্রে নিতান্তই নগণ্য

১৯দ্বীন ইসলাম বিশ্বজনীন জীবন-বিধান জাতিধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের কল্যাণকামী জামায়াতে ইসলামীতে অমুসলিমদের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্তকর্মসূচী ও কার্যক্রম রয়েছেকিন্তু অন্যান্য অনেক ইসলামী দলে তা নেই

২০জামায়াতে ইসলামী সর্ব সাধারণ নেতা-কর্মীকে কোরআন-হাদীস বুঝে পড়তে হয় কোরআন-হাদীসের সহজবোধ্য অনুবাদ ও ব্যাখ্যাগ্রন্থ জামায়াতে ইসলামী চালু করেছে কিন্তু অন্যান্য অনেক ইসলামী সংগঠনেই সাংগঠনিক পরিসরে এধরণের ব্যাপক চর্চার নির্দেশনা নাই। অধিকন্তু কিছু ইসলামী দল বা জামায়াত কোরআন-হাদীস সকলে বুঝে পড়াকে আপত্তিকর বিবেচনা করে কিছু ইসলামী ব্যক্তিত্ব বা সংগঠন জামায়াতে ইসলামীকে অনুসরণ করে বর্তমানে কোরআন-হাদীসের সহজ ব্যাখ্যাগ্রন্থ চালু করেছে মাত্র

২১জামায়াতে ইসলামী শিরক-বিদায়াত বিরোধীকিন্তু বাংলাদেশে কিছু ইসলামী গ্রুপ আছে যাদের মধ্যে শিরক-বিদায়াতের প্রাধান্য রয়েছে

২২জামায়াতে ইসলামী সিরাতুন্নবী (সা:) মাহফিল করে থাকে এবং শিরকী-বিদয়াতী আকিদা ও আমল থেকে মুক্ত অবস্থায় মিলাদুন্নবী(সা:) উৎযাপনকেও সমর্থন করে কিন্তু একদিকে মিলদুন্নবী(সা:) উৎযাপনের বিরোধীতাঅন্যদিকে মিলাদুন্নবী(সা:)কে ইসলামের প্রধানতম আমল ও ধর্মীয় উৎসব (ঈদেপরিণত করার প্রচেষ্টা - এই উভয় বাড়াবাড়ির মাঝখানে জামায়াতে ইসলামী সঠিক অবস্থানে রয়েছে

২৩আদালতে সাহাবার বিষয়ে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের আকায়েদের কিতাব বর্ণিত আকীদায় জামায়াতে ইসলামী বিশ্বাসী। জামায়াতে ইসলামী দ্ব্যর্থহীনভাবে বিশ্বাস করে যেসাহাবায়ে কেরাম (রা:) নবী করিম (সা: )-এর আনুগত্যের একমাত্র আদর্শ নমুনা এবং ইজমায়ে সাহাবা শরীয়তের অকাট্য দলিল জামায়তে ইসলামীর বিভিন্ন প্রশিক্ষণ প্রোগ্রামে সাহাবায়ে কেরামের সত্যনিষ্ঠ ও সংগ্রামী জীবনধারা দৃষ্টান্ত হিসাবে তুলে ধরে তার আলোকে কর্মীদের গড়ে তোলা হয় সাহাবায়ে কেরামের জীবনী জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীদের অবশ্য পাঠ্যযেমন-আবদুল মাবুদের লিখিত কয়েক খন্ডে বিভক্ত `সহাবে রাছুলের জীবনকথা' গ্রন্থ এভাবে জামায়াতে ইসলামীর সামগ্রিক কর্মকান্ডে সাহাবায়ে কেরামের জীবনাদর্শের ব্যাপকচর্চা ও অনুশীলন রয়েছে কিন্তু অন্যান্য ইসলামী সংগঠনে সাহাবায়ে কেরামের জীবনাদর্শের এ ধরণের ব্যাপক চর্চা নাই। অনেক ইসলামী সংগঠনে পরবর্তী কালের কোন কোন ইসলামী ব্যক্তিত্ব বা পীর-অলির জীবনীচর্চাকে প্রাধান্য দেয়া হয়। সাহাবাদের অতিভক্তি শুধু তাদের মুখে মুখেই, বাস্তবে খুঁজে পাওয়া দুরূহ। সাহাবাদের মত ইসলামের জন্য জীবন উৎসর্গ করার আকীদা ও আমল জামাযাতে ইসলামী ও এর সহযোগী সকল সংগঠনেই ব্যাপক দেখা যায়। 


২৪. একজন কওমী আলেম মাওলানা মাসউদুর রহমানের ভাষায়: “জামায়াতে ইসলামী পুরোপুরি নবী-আসহাবদের নকশায়ে কদম অনুসরণ করে চলেছেন অর্থাৎ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের স্ট্রাকচারে গড়া উঠা একটি বিজ্ঞানভিত্তিক দল, এখানে আকিদাগত কোন খোরাফাত বা ভেজাল নেই। আপনি যদি অন্যান্য ইসলামী দল গুলো নিয়ে তাত্ত্বিক পর্যবেক্ষণ করেন, তাহলে দেখবেন কিছু না কিছু আকিদা ও কর্মগত দিক থেকে ঝামেলা রয়েছে, কিন্তু জামায়াত সম্পূর্ণ আকিদা শুদ্ধ একটি দল।” অন্য কিছু ইসলামী দলের আকীদা ও আমলের মধ্যে প্রচুর শিরক, কুফর ও মোনাফেকী দেখা যায়। তারা যখন জামায়াতের আকীদা খারাপের কথা বলে তখন এই প্রবাদটা মনে আসে: চালুনী বলে সূচেরে, তোর গায়ে ছেদা। 

২৫বৃহত্তর ইসলামী ঐক্য প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে জামায়াতে ইসলামী সবসময় অগ্রগামী সংগঠন,  কিন্তু অন্যান্য ইসলামী দলের ভূমিকা এক্ষেত্রে অনেক সময় আপত্তিজনক

২৬ইসলামী জাতীয়তা ভ্রাতৃত্বের চেতনা বিশ্ব মুসলিম ঐক্যের এবং শক্তিমত্তার অন্যতম প্রধান উৎস বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের মুসলিম জাতীয়তার চেতনা এদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রধানতম অবলম্বন এবং হাতিয়ার জামায়াতে ইসলামীর দলীয় আদর্শ ও তৎপরতায় এবং নেতা-কর্মীদের মধ্যে ইসলামী জাতীয়তা-ভ্রাতৃত্বের চেতনায় উজ্জীবন অন্যান্য ইসলামী সংগঠনের তুলনায় উত্তমভাবে প্রকাশিত হয় এক্ষেত্রে জামায়াতে ইসলামী ঐতিহাসিক প্রমাণ রেখেছে

২৭জামায়াতে ইসলামীতে আধুনিক শিক্ষিত ও ধর্মীয় শিক্ষিতদের সুষম সমন্বয় রয়েছেকিন্তু অন্যান্য ইসলামী সংগঠনের সেরূপ নাই

২৮আধুনিক যুগে ইসলামী রাষ্ট্র পরিচালনার যোগ্যতা সৃষ্টির কার্যক্রম জামায়াতে ইসলামীতে যথেষ্ঠ রয়েছেকিন্তু অন্যান্য ইসলামী দলে তা কমই রয়েছে

২৯জাতীয় সংসদের মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালিত হয় কাজেই ইসলামী রাষ্ট্র পরিচালনার যোগ্য লোকদেরকেই কোন ইসলামী দলের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী করা উচিত এক্ষেত্রে জামায়াতে ইসলামী আপন সাংগঠনিক প্রক্রিয়ায় গড়ে তোলা যোগ্যলোকদের মধ্য থেকে বাছাই করে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী করে থাকে যে কেউ প্রার্থিতা চেয়ে প্রার্থী হতে পারেনা কিন্তু অন্যান্য ইসলামী দলগুলো বাতিল দলগুলোর মত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য দরখাস্তের আহবান করে যেকোন ব্যক্তিকেই প্রার্থী করে দেয় অথবা যেকোন ব্যক্তি প্রার্থিতা চেয়ে প্রার্থী হয়ে যেতে পারে এক্ষেত্রে সে ব্যাক্তি ইসলামী চিন্তাচেতনা ও আমলের হতেও পারে অথবা না ও হতে পারে

৩০. রাছুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন: “অচিরেই তোমরা নেতৃত্ব পদের অভিলাষী হয়ে পড়বে। আর কিয়ামতের দিন এটা তোমাদের জন্য লজ্জ্বা ও দুঃখের কারণ হবে” (আবু হুরাইরা -রাঃ  বর্ণিত, বুখারী শরীফ) নেতৃত্ব নির্বাচনের ক্ষেত্রে ইসলামের সাধারণ নীতি হলযে ব্যক্তি কোন পদের জন্য প্রার্থী হয় সে ব্যক্তি সে পদের অযোগ্য সাব্যস্ত হয় জামায়াতে ইসলামী এ নীতি অনুসরণ করে থাকে কিন্তু অন্যান্য ইসলামী দল এ নীতি মোটেও গুরুত্ব দেয়না অথবা যথাযথভাবে  পালন করে না

৩১জামায়াতে ইসলামী নীতিগতভাবে ব্যক্তি পূজায় বিশ্বাসী নয়,  কিন্তু অন্যান্য কিছু ইসলামী দল আছে যারা জাহেলিয়াত প্রভাবিত পীরবাদ অথবা অন্যকিছু সূত্রে ব্যক্তিপূজায় নিয়োজিত

৩২. জামায়াতে ইসলামী আন্তুর্জাতিক,  কিন্তু বাংলাদেশের রাজনৈতিক ময়দানে কার্যরত অন্যান্য ইসলামী দল পুরোপুরি তা নয়

 অতএব তুলনামুলক বিচারে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ উত্তম বিবেচিত হওয়ায় অধিকতর গ্রহণযোগ্য ইসলামী সংগঠন যেকোন আদর্শবাদী সংগঠনেই প্রতিকুল দোষত্রুটি অনুপ্রবেশ করতে পারে সুস্থ শরীরে রোগ হতে পারেসেজন্য প্রয়োজন যথোপযুক্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা অতএব গঠনমূলক ও নির্দেশমূলক সমালোচনার মাধ্যমে নিয়মিত দোষত্রুটি সংশোধনের প্রক্রিয়া বজায় রাখা এবং বিদ্যমান গুণাবলীর বিকাশ সাধন ও উন্নততর গুণাবলীর সমন্বয় সাধন করার প্রয়াস চালু রাখা উচিত এর পাশাপাশি দাওয়াত, সংগঠন ও প্রশিক্ষণশিক্ষা, মানবসেবা ও আয়-উন্নতিমূলক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা ইত্যাদি কাজের মাধ্যমে ব্যাপক শক্তি সঞ্চয় এবং গণমুখী তৎপরতার মাধ্যমে অগ্রসর হলে জামায়াতে ইসলামী আগামী দিনের ইসলামী আন্দোলনে অধিকতর অবদান রাখতে সক্ষম হবে ইনশাআল্লাহ  এখানে উল্লেখ্য যেযথার্থ আত্মমূল্যায়নের মাধ্যমে জামায়াতে ইসলামীর মত আদর্শবাদী আন্দোলনের কর্মীদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা সৃষ্টি করা এবং বিরোধী ইসলামী দলের লোকদের মধ্যে জামায়াতে ইসলামী সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণার হ্রাস করা এই নিবন্ধের প্রধান উদ্দেশ্য

             বিশেষ দ্রষ্টব্যজামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে  বহু পূর্ব থেকে ভ্রান্ত প্রচারণা রয়েছে বাংলাদেশে একজন পীর বলছেনজামায়াতে ইসলামী ইসলামী দল নয়একটি রাজনৈতিক দল মাত্র এই আলোচনায় প্রতীয়মান হয়েছে যে,  জামায়াতে ইসলামী উত্তম ইসলামী সংগঠন অধিকন্তু গঠনমূলক সমালোচনা গ্রহণ করে সংশোধিত হওয়ার মতো উদারতা জামায়াতে ইসলামীর রয়েছে এবং জামায়াতে ইসলামী একটি জিহাদী-শহীদি কাফেলা অতএব ইসলামের পক্ষে কোন ক্ষতিকর কাজে জামায়াতে ইসলামী লিপ্ত থাকতে পারেনা জামায়াতে ইসলামী দ্বারা অতীতে বিশ্বব্যাপী ইসলামের বহুমূখী কল্যাণ সাধিত হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও হবেইনশাআল্লাহ অতএব যে সকল ইসলামী মহল কোন না  কোন কোন কারণে ইসলামের কোন ক্ষতির আশংকায় খুলুছিয়তের সাথে জামায়াতে ইসলামের বিরোধিতা করেন তারা নিঃসন্দেহে আশংকামুক্ত হয়ে এদলের সাথে বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তুলতে পারেন এধরণের ঐক্য গঠনে রয়েছে অফুরন্ত কল্যাণ অন্যথায় জাতিকে ক্ষতির মুখে নিক্ষেপ করার ঐতিহাসিক দায় গ্রহণ করতে হবে এবং আলমে আখেরাতে কঠিন জবাবদিহি করতে হবে


Popular Posts